ত্রিপুরায় শূণ্য পদ ৫১,৭৮৪ — অথচ নিয়োগ নেই! বেকারদের হতাশা ও ক্ষোভ বাড়ছে দিন দিন
ত্রিপুরা রাজ্যে বর্তমানে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে ৫১,৭৮৪টি শূণ্য পদ পড়ে আছে — অথচ দীর্ঘদিন ধরে নিয়োগ প্রক্রিয়া কার্যত বন্ধ। “ডবল ইঞ্জিন সরকার” বলে প্রচার করা বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর রাজ্যে কর্মসংস্থানের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, আজ তা কেবলই কাগজে সীমাবদ্ধ। বাস্তবে বেকার যুব সমাজ দিশেহারা, হতাশ, আর্থিকভাবে বিধ্বস্ত।
বেকারদের দুরবস্থা
ত্রিপুরার প্রতিটি জেলা জুড়ে আজ বেকার যুবক-যুবতীরা চাকরির আশায় সরকারি দপ্তরের দরজায় ঘুরছেন। অনেকে বছর পর বছর বেকার ভাতা বা অস্থায়ী কাজে নির্ভর করে বেঁচে আছেন। অনেকে সরকারি চাকরির আশায় ব্যাঙ্ক লোন নিয়ে গাড়ি কিনে ব্যবসা শুরু করেছেন, কিন্তু সেই ব্যবসাও এখন ক্ষতির মুখে। যেহেতু আয়ের কোনও স্থায়ী উৎস নেই, তাই অনেকেই ঋণের বোঝায় জর্জরিত ও মানসিক চাপে বিধ্বস্ত।
৫১,৭৮৪ শূণ্য পদ — অথচ নিয়োগ শূন্য!
ত্রিপুরা সরকারের বিভিন্ন বিভাগে — শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পুলিশ, প্রশাসন, গ্রামীণ উন্নয়ন, ইঞ্জিনিয়ারিং, সামাজিক কল্যাণ, কৃষি ও বন বিভাগসহ — মোট ৫১,৭৮৪টি শূণ্য পদ রয়েছে।
তবুও নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে না বা ধীর গতিতে চলছে।
সরকারের যুক্তি — “আর্থিক সীমাবদ্ধতা” ও “প্রশাসনিক পুনর্গঠন”। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে —
যদি সত্যিই ডবল ইঞ্জিন সরকার উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দেয়, তবে রাজ্যের এই বিশাল শূণ্য পদ কেন পূরণ করা হচ্ছে না?
নির্বাচনের আগে প্রতিশ্রুতি, পরে নীরবতা
২০১৮ ও ২০২৩ সালের নির্বাচনের আগে বিজেপি স্পষ্ট প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল —
“ত্রিপুরার বেকার যুবকদের জন্য প্রচুর সরকারি চাকরি ও কর্মসংস্থান তৈরি করা হবে।”
কিন্তু আজ বাস্তব চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন।
সরকারি চাকরি প্রায় বন্ধ, নতুন কোনও বড় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হচ্ছে না, বরং আগের চাকরিপ্রার্থীদের পরীক্ষাও স্থগিত বা বাতিল হচ্ছে।
অর্থনীতি ও সমাজে প্রভাব
বেকারত্ব শুধু একটি ব্যক্তিগত সমস্যা নয় — এটি পুরো সমাজ ও অর্থনীতিকে প্রভাবিত করছে।
- স্থানীয় ব্যবসায় মন্দা দেখা দিয়েছে।
- মানুষ ব্যাঙ্ক লোন পরিশোধ করতে পারছে না।
- যুব সমাজের মধ্যে হতাশা ও মানসিক চাপ বেড়েছে।
- অনেকেই রাজ্যের বাইরে কাজ খুঁজতে বাধ্য হচ্ছেন।
তরুণ প্রজন্মের প্রশ্ন
ত্রিপুরার তরুণ প্রজন্ম আজ সরকারের কাছে জানতে চাইছে —
“আমরা যোগ্য, আমরা পড়াশোনা করেছি, আমরা পরীক্ষা দিতে প্রস্তুত — তবুও কেন চাকরি নেই?”
“সরকার কি শুধুই নির্বাচনের সময় প্রতিশ্রুতি দিয়ে আমাদের ভুলিয়ে রাখছে?”
সমাধান কী হতে পারে?
- তাৎক্ষণিকভাবে শূণ্য পদ পূরণের উদ্যোগ নেওয়া।
- নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও দ্রুত সম্পন্ন করা।
- যুবদের জন্য স্কিল ডেভেলপমেন্ট ও স্বনির্ভর প্রকল্প বাস্তবায়ন।
- লোন পুনর্গঠন বা স্বস্তি প্যাকেজ
Share this content: